বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের কর্মীদের বেতনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে হিসাব শাখার জুনিয়র নিরীক্ষক ফয়সাল মাহমুদকে আটক করেছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নগরের পাহাড়তলীর রেলওয়ে কার্যালয় থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ফয়সাল মাহমুদ ঠিক কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, সে হিসাব পুরোপুরি পাওয়া যায়নি। তবে তিনি কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা সরিয়ে নিয়েছেন, এমন প্রমাণ প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে। অর্থের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
সূত্র জানায়, আত্মসাৎ করা এই অর্থ পারিবারিক ও স্ত্রীর নামে জমি কেনায় খরচ করেছেন ফয়সাল। চট্টগ্রাম নগরের খুলশীর টিকিট প্রিন্টিং কলোনিতে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তাঁর বাবাও রেলের কর্মকর্তা ছিলেন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেওয়ার জন্য গত সেপ্টেম্বরে ‘আইবাস + +’ সিস্টেম চালু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কর্মকর্তাদের এ পদ্ধতিতে বেতন দেওয়া হচ্ছিল। পর্যায়ক্রমে কর্মচারীদের যুক্ত করা হবে। এ পদ্ধতির বিষয়ে ফয়সালসহ কয়েকজনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
রেলের কর্মকর্তারা বলেন, সম্প্রতি এক কর্মকর্তা ফয়সাল মাহমুদের কারসাজির বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপর বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ যাচাই-বাছাই শুরু হয়। পরে আইভাস সিস্টেমের মাধ্যমে অর্থ জালিয়াতির এ ঘটনা ধরা পড়ে।
রেলের পূর্বাঞ্চলের প্রধান অর্থ ও হিসাব কর্মকর্তা (পূর্ব) কামরুন্নাহার আজ রোববার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ফয়সাল কারসাজির মাধ্যমে নিজের ব্যাংক হিসাবে টাকা সরিয়ে নিয়েছেন। কত টাকা সরিয়ে নিয়েছেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লাখ টাকা সরানোর হিসাব পাওয়া গেছে। এর পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
কামরুন্নাহার আরও বলেন, ফয়সাল মাহমুদের কাছ থেকে আত্মসাতের অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
রেলের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হিসাব শাখার এক কর্মীর অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তাঁরা জেনেছেন। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।